শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪১ অপরাহ্ন
জিটিবি নিউজঃ গাইবান্ধায় করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দুই দফা বন্যায় পানিবন্দি হয়েছে জেলার চার উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের দেড় লাখ মানুষ। বাড়িঘর ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু এলাকায় আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলো আরও বিপাকে পড়েছেন গো খাদ্য নিয়ে। পাননি সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা।
বুধবার সরেজমিন ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বালাসী থেকে সৈয়দপুর এলাকা পর্যন্ত ঘুরে গরু ছাগল নিয়ে মানুষের দুর্ভোগের এমন চিত্র চোখে পড়ে। সংকীর্ণ বাঁধে টিনের চালা তুলে নিজেদের কোনোমতে মাথা গোঁজার ঠাই করে নিয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। তাদের অধিকাংশই গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী নিয়ে একই চালের তলায় থাকতে হচ্ছে।
ভাষার পাড়া গ্রামের মালেক মিয়া (৬০) বলেন, তিনটা গরু নিয়া বাঁধের ওপর কোনোমতে চালা তুলি আছি। কিন্তু গরুর খড় শেষ হয়া গেছে। নিজের খাবারই জোটেনা গরুক কি খাওয়ামো। কোরবানীর হাটে বেচার জন্য গরু পালছি কিন্তু এখন কেনার মতো লোক নাই। হাটও বন্ধ।
একইভাবে বাধে আশ্রিত মালেকা বেগম, খয়বার মিয়া, হাসেম আলী, জাবেদুর, রহমান জানালেন, গরু ছাগলের খাদ্য সঙ্কটের কথা। কারো কাছে সামান্য খড় মজুদ আছে, আবার কেউ বাজার থেকে ভুষি, গোখাদ্য কিনে খাওয়াচ্ছেন। তবে বেশিদিন খাদ্য কেনার সামর্থ্য তাদের নেই। খাদ্যের অভাবে পশুগুলো দুর্বল হয়ে পড়লে বাজারে দাম কম পাবার চিন্তায় পড়েছেন তারা। এখন পর্যন্তু কোনো পশুরোগ দেখা না দিলেও গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে টিকা দেওয়া হচ্ছে বলে তারা জানান। তবে সরকারিভাবে কোনো গোখাদ্য তারা সহায়তা এখনও পাননি।
গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, জেলায় কোরবানী উপলক্ষে পশুর চাহিদা ৬১ হাজার। কিন্তু এবার খামারি ও পরিবারগুলো বাজারজাতকরণের জন্য ৭৭ হাজার পাঁচশ গরু ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এরমধ্যে খামারিরা পালন করেছে ৫৩ হাজার একশ ও পরিবারগুলো পালন করেছে ২৪ হাজার চারশ গরু ছাগল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকস্থানেই হাট বসছে না। এ পরিস্থিতিতে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থা করেছে।
তিনি আরও বলেন, বন্যা কবলিত গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ এলাকায় পশু খাদ্য সরবরাহের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দ্রুত এই পশু খাদ্য সরবারহ করা হবে। এছাড়া এসব এলাকায় ১১টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।