বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৭ অপরাহ্ন

২৫ কোটির এমবাপ্পের দাম ৪ কোটি করে দেবে করোনা

কিলিয়ান এমবাপ্পেকে কিনতে চাইলে কত অর্থ খরচ করতে হবে কোনো দলকে? দলবদলের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট ট্রান্সফার মার্কেটের চোখে করোনা সংক্রমণের আগে এই ফুটবলারের মূল্য ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি ইউরো। যদিও বাস্তবে দলবদলের মূল্যটা ট্রান্সফার মার্কেটের চেয়ে বেশিই হয়। ফলে এমবাপ্পের দিকে লোভী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা রিয়াল ২৫ কোটি ইউরোও দিতে প্রস্তুত ছিল এমবাপ্পের জন্য। যদিও করোনা পরবর্তী ফুটবলে এমবাপ্পের মূল্য নাকি অনেক কমে যাবে।

করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আগে নাকি এমবাপ্পের দলবদল প্রায় সেরেই ফেলেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি সম্ভাব্য সব দলবদলকেই হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। এর মাঝেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সংসদে ফ্রেঞ্চ সদস্য ড্যানিয়েল কন-বেন্ডিট বলছেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে ইউরোপের সব লিগ যদি বাতিল হয়ে যায়, তবে সে ধাক্কা সামলে নিয়ে কোনো দলের পক্ষেই আর দলবদলে বড় অঙ্ক খরচ করা সম্ভব হবে না। ফলে এমবাপ্পের দলবদলের মূল্যটা মাত্র ২৫ থেকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোতে নেমে আসবে।

করোনা সংক্রমণ কাটিয়ে উঠে আগামী আগস্টের মধ্যে মাঠে ফেরার আশা সবার। কিন্তু পরের মৌসুমের দলবদলেও করোনার প্রভাব থাকবে বলেই বিশ্বাস সবার। বিশেষ করে খেলা বন্ধ হওয়ার এক মাস পরই যেখানে ক্লাবগুলো খেলোয়াড়দের বেতন কমাতে বাধ্য হয়েছে এবং সরকারি সাহায্য চাইছে, তাতে নিশ্চিত যে সংকট আরও লম্বা সময় চললে অধিকাংশ ক্লাবের আর্থিক অবস্থা ভেঙে পড়বে। আর এপ্রিলের কর্মচারীদের বেতনের জন্য সরকারি সাহায্য চাওয়া দলগুলোর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দলবদলের বাজারে টাকা ঢালা যে প্রশ্নবিদ্ধ হবে সেটাও প্রায় নিশ্চিত এমন অবস্থা ফুটবলের দলবদলের বাজারের চেহারা বদলে দেবে বলে ধারণা বেন্ডিটের।

ওস্ত ফ্রান্সে নিজের কলামে এই রাজনীতিবিদ লিখেছেন, ‘করোনাভাইরাস সংকট শেষ হলে, এমবাপ্পের দাম ২০০ নয়, ৩৫ থেকে ৪০ মিলিয়ন ইউরো হবে।’ কিছুদিন আগেই যাকে ২৫০ মিলিয়নে কিনতেও পিএসজির সঙ্গে লড়তে হতো ক্লাবগুলোকে তাঁর এমন মূল্যে নির্ঘাত হাসিতে মুখ ভরে যাবে রিয়াল বা লিভারপুলের মতো দলগুলোর। কিন্তু বেন্ডিটের ধারণা, ৩৫ বা ৪০ মিলিয়ন ইউরোতেও কোনো খেলোয়াড় কেনার অবস্থায় থাকবে না ইউরোপের কোনো ক্লাব, ‘কিন্তু কার পক্ষে ওকে এই দামে কেনা সম্ভব? এই সংকটের ফলে পেশাদার খেলা থেকে অস্বাভাবিকতা সব দূর হবে। এটা অনেকটা এমন যেন, পারমাণবিক হামলার শিকার হয়েছি আমরা, এবং সবকিছু আবার নতুন করে বানাতে হবে। তবে এবার ভিত্তিগুলো বদলানো হবে।’

শুধু তাই নয়, বেন্ডিটের ধারণা, এই সংকটের ফলে ক্লাব ফুটবলে বড় তারকাদের অস্বাভাবিক বেতন-বোনাস ও অন্যান্য সুবিধাও কমে আসবে, ‘নতুন বাধ্যতামূলক কিছু নিয়ম সৃষ্টি হবে এবং বেতনের সর্বোচ্চ সীমা ঠিক করে দেওয়া হবে। এমনভাবে পুনর্গঠন করা হবে তাতে শুধু খেলোয়াড়দের বেতনই নয়, তাঁদের ছবি স্বত্ব, স্পনসরের অর্থ সবকিছুই কমে যাবে। আমাদের খেলোয়াড় এজেন্টের পদ্ধতিটাও ভাঙতে হবে। এরা ফুটবলে অযাচিত ব্যবসা করছে। আমার মনে হয় না, খেলোয়াড়দের কম বেতন দিলে তাদের খারাপ খেলবে। ভবিষ্যতে ফুটবলে টেলিভিশন স্বত্ব থেকে পাওয়া অর্থের কিছু অংশ অলিম্পিকের অন্য খেলা ও অপেশাদার ফুটবলের জন্যও রাখতে হবে।’

বিশ্ব ফুটবল এখন যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে, বেন্ডিটের চাওয়া পূরণ হওয়া প্রায় অসম্ভব বলেই ঠেকছে। অবশ্য করোনাভাইরাস অকল্পনীয় অনেক কিছুই তো দেখিয়েছে বিশ্বকে!

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335