শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৮ অপরাহ্ন
চাঁদপুর গ্রামের ফজলুল হক। পেশায় টিন মিস্ত্রি। একমাত্র মেয়ে মনিরাকে কষ্ট করে বিয়ে দিয়ে পড়েছিলেন বিপাকে। জামাই যৌতুকের লোভে করতো নিষ্ঠুরতা। খবর পেয়ে (ওসি) মিজানুর রহমান নিজ উদ্যোগে দুই পরিবারকে ডেকে মিমাংসা করে দিলেন। একইভাবে গাংনগর এলাকার আবু জাফর। প্রতারক স্ত্রীর খপ্পরে জমি বিক্রি করে সহায়-সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। অভিযোগ পেয়েই তৎক্ষনাৎ ব্যবস্হা নিয়ে ২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে দিলেন ওসি। শুধু ফজলুল বা আবু জাফরই নয় এরকম শত শত অসহায় মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক পুলিশ অফিসার হিসাবে আখ্যা পেয়েছেন শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান।
সেবায় যে পুলিশের ধর্ম তিনি তা শিবগঞ্জ বাসীকে বুঝাতে এবং সে সেবা দিতে সক্ষম হয়েছে। সাধারণত, পুলিশ আমাদের কাছে যেন সৎ মায়ের অপ্রিয় সন্তান, যাকে যখন যেভাবে খুশি রাঙানো যায়। বিদ্যমান আইন, সমস্যা, বাধ্যবাধকতা যাই হউক, দিনশেষে সবাই ঢালাও ভাবে সমস্ত দায় বর্তায় শুধু সৎ মায়ের ওই অপ্রিয় সন্তান পুলিশের উপরই। আমাদের সমাজের এমন কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে বৃদ্ধাঙ্গাগুলি দেখিয়ে নিজেকে মানবিক, বিনয়ী, সৎ, মেধাবী, সুন্দর মনের অধিকারী হিসেবে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, যুব সমাজকে মাদক থেকে দুরেে রাখার জন্য তিনি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উৎসাহিত করেছেন। এমনকি তিনি নিজেও ভাল ভাল গান পরিবেশন করে সবাইকে ধন্য করেছেন। আমি ১৯৯০ সাল থেকে সংবাদপত্রে কাজ করে আসিতেছি। এর মধ্যে শিবগঞ্জ যতজন অফিসার ইনচার্জ এসেছেন তার মধ্যে দুজন অফিসারের কথা শিবগঞ্জ বাসী আজীবন মনে রাখবেন। তার মধ্যে বর্তমান মিজানুর রহমান ও ছামছুল হক পিপিএম।। মিজানুর রহমান শিবগঞ্জ থানায় যোগদান করেছিলেন ২০১৮ সালে। এই সময়ের মধ্যে জেলায় শ্রেষ্ট ওসি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ৩ বার। তিনি শুধু শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে খাতা পত্রেই নির্বাচিত হননি, থানাটি সৃষ্টির পর থেকে সর্বোচ্চ কাজ ও পরিবর্তন হয়েছে তার হাত ধরেই। মনোরম পরিবেশে সাজিয়েছেন থানাটিকে। থানা পুলিশের জীবনমান উন্নয়ন, থানা এলাকাকে মাদক মুক্তকরণ, বাল্য বিবাহকে উপজেলা থেকে দুরীকরন, কমিউনিটি পুলিশিং শক্তিশালি করতে সফল হয়েছেন শতভাগ। প্রত্যেক মাসে চৌকিদারদের সাথে নিয়মিত মত বিনিময়, তাদের ভালো কাজে উৎসাহিত করার জন্য পুরস্কার দেওয়া, চৌকিদারদের ঈদ সামগ্রী বিতরণ এই থানায় শুরু তার হাত ধরেই। তাছাড়া অসুস্থ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাজের সাথে সরব অংশগ্রহন যেন তার রুটিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবশ্রেণীর মানুষের সাথে হাসিমুখে কথা বলা, সাধ্যনুযায়ী অসহায়দের সহায়তা করা তার নিত্যদিনের রুটিন।
থানার এস. আই. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চাকুরির বয়সে অনেক পুলিশ অফিসারের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে কিন্ত বর্তমান ওসি মিজান স্যারের সাথে কাজ করে আমি যা শিখেছি তা আমার গোটা চাকুরির বয়সে শিখতে পারিনি। তিনি শুধু আমাদের থানার পুলিশদের প্রিয় পাত্র ও অভিভাবকই নন, গোটা শিবগঞ্জের মানুষের আস্থার ঠিকানা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যখন কোন কাজে যাই জনগণ হাসি মুখে এগিয়ে এসে বলে ভাই আপনাদের ওসি সাহেব নাকি অনেক ভালো মানুষ? তখন আনন্দে বুকটা ভরে উঠে যে, এমন একজন সৎ, মেধাবী ও মহান মনের অধিকারী একজন অফিসারের সাথে কাজ করছি। দেউলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান বলেন, এমন জনবান্ধব অফিসার আমরা এর আগে থানায় পাইনি।