শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন

সরকারের বিরুদ্ধে বাড়ছে ইরানিদের ক্ষোভ

জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : গত বুধবার ইরানে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৭৬ আরোহী নিহত হন। প্রথমে এ ঘটনা দায় স্বীকার করেনি ইরানের সরকার। ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানে তাদের সেনাবাহিনীই যে ভুল করে হামলা চালিয়েছে, দুদিন আগে তা স্বীকার করে নিয়েছে ইরান সরকার। যাঁরা ওই ভুল করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। কিন্তু তাতে চিড়ে ভিজেনি। বরং সরকারের বিরুদ্ধে বাড়ছে আমজনতার ক্ষোভ।

গত বুধবার বিমান ভেঙে পড়ার পরে ক্রমাগত সেটিকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দাবি করা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ জানাতে পথে নেমেছেন তাঁরা।

ইরানে সরকারের বিরুদ্ধে আমজনতার বিক্ষোভ-কর্মসূচিতে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, গতকাল রাতে তেহরানের আজাদি স্কোয়ারে বিক্ষোভ করছিলেন কয়েকশ’ মানুষ। অভিযোগ, তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। অনেকেই ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপরেও বিক্ষোভস্থল থেকে মানুষ সরে না-যাওয়ায় গুলি চালায় পুলিশ।

সংবাদ সংস্থার দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া দু’টি ভিডিওতে পুলিশকে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীদের মাঝে হঠাৎই এসে পড়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল। এক নারীকে বলতে শোনা যায়, এটা আজাদি স্কোয়ার। ওরা মানুষকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে। একনায়কের মৃত্যু হোক।

অন্যটিতে দেখা গেছে, মাটিতে চাপ-চাপ রক্ত। কয়েকজন যুবক এক নারীকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর পায়ে গুলি লেগেছে। একজনকে বলতে শোনা যায়, প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে। এখনই ব্যান্ডেজ লাগবে।

পুলিশ গুলি চালালেও তাঁরা প্রতিবাদের পথ থেকে সরবেন না বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিক্ষোভকারীরা।

জ়াহরা রাজঘি নামে এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, যখনই বিমান ভেঙে পড়ার কথা ভাবছি, আমার হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যাচ্ছে। মৃতদের পরিবারের কথা ভেবে লজ্জায় ডুবে যাচ্ছি। তিনদিন ধরে ধোঁয়াশায় রেখেছিল সরকার।

আরও এক বিক্ষোভকারী বলেন, রাজনৈতিক ফায়দার জন্য সত্যটা চাপা দিয়েছিল সরকারি সংবাদ সংস্থা। পরে অবশ্য সবকিছুই সামনে এসেছে। ওদের সত্যিটা বলতেই হয়েছে।

এদিকে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরান সরকারের উদ্দেশে তিনি টুইটবার্তায় বলেন, বিক্ষোভকারীদের হত্যা করবেন না। ইংরেজির পরে একই বার্তা তিনি ফার্সিতেও লিখেছেন। তাঁর হুঁশিয়ারি, গোটা দেশ দেখছে। সবচেয়ে বড় কথা আমেরিকা সব দেখছে।

গতকাল রাতে গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি প্রশাসন। তাই কোনও বিক্ষোভকারী মারা গিয়েছেন কি-না, স্পষ্ট নয়।

তবে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিমান ধ্বংসের ঘটনায় তারা কোনও কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে না। সরকারের যে শীর্ষ কর্মকর্তারা বিষয়টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের শাস্তি হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার।

একই সঙ্গে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রব ম্যাকেয়াররে গ্রেপ্তারি নিয়েও মুখ খুলেছে তেহরান। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির দাবি, ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত যে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তা প্রথমে বোঝা যায়নি।

তিনি বলেন, এক বিদেশি নাগরিক বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে প্রথমে জানা যায়। পরে রব যখন ফোনে কথা বলেন, বিষয়টি স্পষ্ট হয়। আমি বিষয়টি অবহিত হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যেই রাষ্ট্রদূতকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335