শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন

ফের বিদ্যুতের দাম বাড়ােনার প্রস্তাব

জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : ফের বিদ্যুতের পাইকারি পর্যায়ের মূল্য বাড়াতে চায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)-এর কাছে পিডিবি মূল্য বাড়ানোর এই প্রস্তাব দেয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, কমিশন পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নিলে গ্রাহক-পর্যায়েও মূল্য বাড়বে। তখন লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দেবে।

এর আগে, ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়েছিল। তখন গড়ে ইউনিট-প্রতি ৩৫ পয়সা মূল্য বাড়ানো হয়, যা ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। আর ‌২০১৫ সালে সর্বশেষ পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ বাড়ানো হয়। সূত্র জানায়, এই সপ্তাহের মধ্যেই পিডিবি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দেবে কমিশনের কাছে। বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব প্রসঙ্গে পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর জন্য একটি প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছি। প্রস্তাবে কোনও সংখ্যার কথা উল্লেখ করিনি। শুধু লোকসানের একটা হিসাব দিয়েছি। চিঠিতে বলেছি, সময় আসছে, বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। গ্যাসের মূল্য বেড়ে গেছে। গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও বাড়ছে। ফলে, বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।’ পিডিবির অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা মূল্য বাড়ানোর কোনও প্রস্তাব দেইনি। আমরা বলেছি, ২০২০ সালে আমাদের বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই সময় আমাদের প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে বাকি আট হাজার ৬০৮ কোটি টাকা কীভাবে পূরণ করা হবে, তা-ই জানানো হয়েছে কমিশনকে। কমিশন এখন সিদ্ধান্ত নেবে বিদ্যুতের মূল্য বাড়াবে নাকি ভর্তুকির আকারেই পিডিবিকে দেওয়া হবে।’ এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা এক পয়সাও বাড়াতে বলিনি। আমরা শুধু লোকসানের হিসাব দিয়েছি। আমরা যেমন বলি, একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করে মূল্য বাড়াতে বলি। এবার এ ধরনের কিছু উল্লেখ করা হয়নি।’ প্রসঙ্গত, গত ১২ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে মোট ৫৩ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। বছরভিত্তিক ভর্তুকির হিসাব বলছে, ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে বিদ্যুতে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৩০০ কোটি টাকা। ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে ছিল ৬০০ কোটি, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে এক হাজার ৭ কোটি, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে কিছুটা কমে ৯৯৪ কোটি, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে তা তিনগুণ বেড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা, ২০১১-২০১২ অর্থবছরে ৬ হাজার ৩৫৭ কোটি, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে আবার একটু কমে ৪ হাজার ৪৮৬ কোটি, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে আবার তা বেড়ে ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এরপর ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে তা ৮ হাজার ৯৭৮ কোটি, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে আবার কমে ৪ হাজার ৩৬৫ কোটিতে দাঁড়ায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কমে ৩ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা, এরপর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়ায় হয় সাত হাজার ৯৭০ কোটি। চলতি অর্থবছর ভর্তুকির সম্ভাব্য পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335