শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০২ পূর্বাহ্ন

রুয়েটে পলিটিক্যাল ব্লক বানিয়ে ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়

জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ছয়টি আবাসিক হলে টর্চার সেল রয়েছে। হলের কয়েকটি কক্ষ দখল করে পলিটিক্যাল ব্লক বানিয়ে ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এরমধ্যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলকে টর্চার সেলের প্রাণকেন্দ্র বলা হয়। নেতাদের নির্দেশনা না মানলে সেলগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘শিবির’ অ্যাখ্যা দিয়ে নির্যাতন করা হয়।

রুয়েটের ছয়টি আবাসিক হলের প্রতিটিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পলিটিক্যাল ব্লক বানিয়ে কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে। এসব ব্লক ছাত্রলীগের একেকটি ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ‘শিবির’ সন্দেহে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হয়।

পূর্বশত্রুতা বা চাঁদাবাজির জন্যও শিক্ষার্থী ও দলীয় কর্মীদের ধরে এনে নির্যাতন করা হয়। ‘শিবির’ বা ‘মাদক ব্যবসায়ী’ বলে পুলিশে দেয়া হয়। অবশ্য সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পেয়ে পরবর্তী সময় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।

শিবির ধরার ক্রেডিট ও চাঁদাবাজি করার উদ্দেশ্যে টর্চার সেল তৈরি করা হয়। রুয়েটের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলকে টর্চার সেলের প্রাণকেন্দ্র বলা হয়। ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে হলগুলো জিম্মি। সিট বাণিজ্য করে তারা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীকে হলে নিয়ে মারধর করা হয়। নেতাদের নির্দেশনা না মানলে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে চলে মারধর। গত বছর পর্যন্ত প্রতিনিয়ত আতঙ্কে ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ বছর শিবির সন্দেহে মারধরের অভিযোগ নেই।

তবে চাঁদার দাবিতে জিম্মি ও মারধর করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও কেউ ভয়ে মুখ খোলেন না। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দাপটে অসহায় প্রশাসনও। এসব ঘটনায় জড়িত নেতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

ছাত্রলীগের কাছে অসহায় হলের প্রাধ্যক্ষরা। সম্প্রতি বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার পর আবাসিক হলে টর্চার সেলের বিষয়টি সামনে আসে।

২০১৭ সালের ১৭ আগস্ট পূর্বশত্রুতার জের ধরে রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-গণশিক্ষা সম্পাদক নির্ঝর আহমেদকে মারধর করে দলীয় কর্মীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগ কর্মী আমিনুল ইসলাম হীরা সেখানে গেলে তাকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়।

একই বছর ২৫ অক্টোবর শিক্ষার্থী সাইফকে ‘শিবির’ সন্দেহে মারধর করে পুলিশে দেয় রুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর আগে ১২ এপ্রিল রুয়েটের আবাসিক হল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্র শহিদুল ইসলামকে শিবির সন্দেহে আটক ও মারধর করে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রলীগ নেতা জানান, নিজেদের জাহির করতে মাঝে মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে এনে মারধর করা হয়। তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলে শিবির তকমা দিয়ে পুলিশে দেয়া হয়।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে রুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি নাইমুর রহমান নিবিড় বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে মারধর করা হয় না। বরং শিক্ষার্থীকে কেউ মারধর করলে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হয়।

শুধু চিহ্নিত শিবির নেতাকর্মীদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। রুয়েট ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রবিউল আওয়াল বলেন, ঘটনা ঘটার পর শুনতে পাই। তবে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335