শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন
জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : বগুড়ায় ইজিবাইক শ্রমিকদের সমাবেশে পুলিশের বাধার অভিযোগ করা হয়েছে।মঙ্গলবার বিকেলে শহরের সাতমাথায় এই ঘটনা ঘটে।
জিবাইক শ্রমিক ফ্রন্ট উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার পক্ষথেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর’১৯) বেলা সাড়ে ১২ টায় ইজিবাইক শ্রমিক ফ্রন্ট উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে সড়কে ইজিবাইক চালকদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ছোট বাহনের জন্য মহাসড়কে পৃথক লেন, আন্ডার পাস নির্মাণ করা এবং তার পূর্ব পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের সময়সীমা নির্ধারণ করা: যেমন রাতে, অন্ধকারাচ্ছন্ন বা কুয়াশার সময়ে কিংবা খুব ভোরে মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা, চালকদের ট্রাফিক আইন, সংকেত সম্পর্কে সচেতন করা সহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাত্রী এবং জীবিকার নিরাপত্তা বিধান করা, আটককৃত সকল ইজিবাইক ও থ্রিহুইলার ছেড়ে দেয়া এবং দিনাজপুরের বড়মাঠ থেকে কান্তনগর পর্যন্ত রোড পারমিশন দেয়ার দাবিতে বগুড়া সাতমাথায় সমাবেশ করে হাইওয়ে পুলিশ সুপার, বগুড়া রেঞ্জ বরাবর মিছিল নিয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করার কর্মসূচী গ্রহন করা হয়।কর্মসূচি নির্ধারিত থাকলেও সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ সেই সমাবেশে বাধা প্রদান করে এবং শ্রমিকদের লাঠিচার্জ করে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। তারা মিছিল করে স্মারকলিপি দেয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরবর্তীতে নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে শুধুমাত্র হ্যান্ডমাইকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় এবং ৫/৬ জনের একটি প্রতিনিধি দলকে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার অনুমতি দেয়। পরবর্তীতে বিকাল ৪ টায় ৬ জনের একটি প্রতিনিধি দল হাইওয়ে পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে।
পুলিশি হামলার পরবর্ততীতে সাতমাথার সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, ইজিবাইক চালক শ্রমিক ফ্রন্ট উত্তরবঙ্গ শাখার ইনচার্জ নবকুমার কর্মকার বক্তব্য প্রদান করেন, ইজিবাইক চালক শ্রমিক ফ্রন্ট রংপুর জেলা উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুস,রিক্সা, অটোরিক্সা ও ইজিবাইক সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রিয় সদস্য সচিব প্রকৌশলী ইমরান হাবীব রুমন, রাজশাহী জেলা উপদেষ্টা আলফাজ হোসেন , বগুড়া সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ,ইজিবাইক চালক শ্রমিক ফ্রন্ট দিনাজপুর জেলা উপদেষ্টা কিবরিয়া হোসেন, ইজিবাইক চালক শ্রমিক ফ্রন্ট দিনাজপুর জেলা নেতা মোহাইমেন হক আমিনুল ইসলাম প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে নব কুমার কর্মকার এই অযৌক্তিক পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং শ্রমিকদের পেটের ভাতের ব্যবস্থা না করে উল্টো লাঠি চার্জ করায় পুলিশ প্রশাসনকে ধিক্কার জানায়। সেই সাথে আরো বলেন “উত্তরাঞ্চলে তেমন কোন শিল্প কারখানা না থাকায় শুধু কৃষির উপর নির্ভর করে এই অঞ্চলের জনগণকে জীবন যাপন করতে হয়। বেকার সমস্যা সমাধানে কোন কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় বেকার সমস্যা তীব্র। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার ইজিবাইক চালক জীবিকা অর্জনের আর কোন পথ না পেয়ে কখনো জমি বিক্রি করে, কখনো ঋণ করে ইজিবাইক কিনে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কর্মসংস্থান, কৃষিপণ্য ও যাত্রী পরিবহণে এখন গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ইজিবাইক। সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী, নারী ও শিশু এবং বৃদ্ধরাই প্রধানত আমাদের যাত্রী। ইজিবাইক এখন আমাদের কর্মসংস্থানের একটি গুরত্বপূর্ণ খাত। পঞ্চগড় থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার, দোকানপাট, বাড়ি ঘরে যাতায়াতে প্রয়োজনীয় বাহন হিসেবে ইজিবাইক পরিচিত হয়ে উঠেছে। স্বল্প দূরত্ব, স্বল্প ব্যয় এবং সহজে ও সবসময়ে ব্যবহারের জন্য ছোট বাহনের বিকল্পও নাই। কাজেই ইজিবাইক সমস্যা সমাধান করা আজ সময়ের দাবি।”
প্রকৌশলী ইমরান হাবীব রুমন শ্রমিকদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন শ্রমিকের ন্যায্য দাবির কথা প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার একটা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশ বাধা দিতে পারে না। এই বাঁধা অন্যায় বাঁধা, অন্যায্য বাধাঁ। তিনি আরো বলেন, “কিছুদিন ধরে সড়কে ইজিবাইক চলাচলে কিছু বিধিনিষেধ, গাড়ি আটক সহ পুলিশ কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে হাজার হাজার ইজিবাইক চালক ও তার পরিবারের জীবন ভীষণ সঙ্কটে পতিত হয়েছে। কখনো কখনো কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে। শ্রমিকরা কর্মসংস্থানের আর কোন উপায় না পেয়ে এই পেশায় আসতে বাধ্য হয়েছে। ফলে একটি সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে ইজিবাইক চলাচল করলে তা যাত্রী-পণ্য পরিবহণ ও আমাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।”
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সড়কে ইজিবাইক চালকদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ছোট বাহনের জন্য মহাসড়কে পৃথক লেন, আন্ডার পাস নির্মাণ করা এবং তার পূর্ব পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প গতির যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের সময়সীমা নির্ধারণ করা: যেমন রাতে, অন্ধকারাচ্ছন্ন বা কুয়াশার সময়ে কিংবা খুব ভোরে মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা, চালকদের ট্রাফিক আইন, সংকেত সম্পর্কে সচেতন করা সহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাত্রী এবং জীবিকার নিরাপত্তা বিধান করা, আটককৃত সকল ইজিবাইক ও থ্রিহুইলার ছেড়ে দেয়া এবং দিনাজপুরের বড়মাঠ থেকে কান্তনগর পর্যন্ত রোড পারমিশন দেয়ার দাবি জানান এবং এই পদক্ষেপ সমূহ গ্রহণের মাধ্যমে হাজার হাজার ইজিবাইক চালকদের জীবিকা নির্বাহের এবং এলাকাবাসির অল্প খরচে চলাচলের সুযোগ করার দাবি জানান।