শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমার জলসীমায় আটক ১৭ জেলেকে ফেরত এনেছে কোস্টগার্ড

জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : মিয়ানমারে জলসীমায় উদ্ধার বাংলাদেশি ১৭ জেলেকে ফেরত দিয়েছে সে দেশের নৌবাহিনী।

শুক্রবার তাদের মিয়ানমার সিট্যুয়েতে অবস্থিত  বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ওই জেলেদের কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রতিনিধি দল।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টায় মিয়ানমারের সিট্যুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটের একটি টিম ট্রলারসহ ১৭ জেলেকে নিয়ে সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের দক্ষিণ পূর্বে দুই দেশের জলসীমার শূণ্যরেখায় নিয়ে আসেন। পরে তাদের বিসিজিএস তাজউদ্দিন জাহাজে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার ১৭ জন জেলেকে নিজেদের জলসীমা থেকে উদ্ধার পূর্বক আটক করেছিল মিয়ানমার নৌবাহিনী। এদের মধ্যে ভোলা জেলার তেরজন, চট্টগ্রামের দুইজন, মুন্সীগঞ্জ ও ঝালকাঠির একজন করে বাসিন্দা রয়েছে।

কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলার ‘এফবি গোলতাজ-৪’ গত তিনদিন আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সাগরে মাছ শিকারে যায়। দুই দিন পর ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে ভাসতে মিয়ানমারের সীমানায় পৌঁছে। সেখানে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ইন-লে’ ১৭ জন জেলেসহ বাংলাদেশি ট্রলারটি উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড আটক জেলেদের ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়। কোস্টগার্ড ও মিয়ানমার নৌবাহিনীর আলোচনায় সেদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটকে ১৭ জেলেসহ ট্রলারটি হস্তান্তর করেন মিয়ানমার নৌবাহিনী।

এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে কোস্টগার্ডের জাহাজ তাজউদ্দীন এর কমান্ডার এসএম মেজবাহ উদ্দিন জানান, সরকারের প্রচেষ্টায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর সাথে আলোচনা করে ফিশিং ট্রলারসহ ১৭ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। ইঞ্জিন বিকল হয়ে বাংলাদেশি ট্রলারটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাথিডং উপকূলের মাইও নদীর মোহনায় ঢুকে পড়েছিল।

তিনি আরো বলেন, এই প্রথম সাগরের মাঝখানে দুই দেশের জলসীমার শূণ্যরেখায় দুই দেশের বাহিনী পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে আটক বাংলাদেশি জেলেদের ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা জেলেরা হলেন ভোলা জেলার সদরের চুন্নাবাদ এলাকার মো. মিলনের ছেলে জাকির হোসাইন (৪৪), একই জেলার চরফ্যাশন উপজেলার নোরাবাদ এলাকার আব্দুল লতিফ ব্যাপারির ছেলে আবুল কালাম (৫৬), গোলদার হাট এলাকার মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে কামাল সওদাগর (৪৯), উত্তর মাদ্রাজ এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৫৯), নীলকমল এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে মোতাহার (৫৫), একই এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে বেলাল হোছাইন (২৭), মৃত নজির আহমদের ছেলে মোঃ ফারুক (৪৩), আব্দুল বারেক চৌকিদারের ছেলে মোঃ ছলিম (৪০), চরফ্যাশন সদরের নুর মোহাম্মদ পাটোয়ারীর ছেলে মোঃ জসিম (৫১), চরফ্যাশন পৌর এলাকার আবি আব্দুল্লাহর ছেলে আবুল কালাম (৫৭), একই এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে মোঃ নেছার (৪৬), দৌলতখান উপজেলার কলাখোপা এলাকার মোঃ আলমগীরের ছেলে মোঃ আলামীন (১৯),  চরখলিফা এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম (২৯), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মোঃ শাহ আলম (৬১) , একই উপজেলার শোভনদন্দী এলাকার মৃত সোলায়মানের ছেলে মো. জসিম (৩৩), মুন্সীগঞ্জের টঙ্গী বাড়ি উপজেলার জাহের আলীর ছেলে আবু সায়েদ (৩৬) ও ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলার আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. নুরুজ্জামান (৪৬)।

ফেরত আসা জেলে শাহ আলম বলেন, আমরা ২৯ নভেম্বর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে দুইদিন পর ইঞ্জিন বিকল হয়ে মিয়ানমার সীমানায় পৌঁছে যায়। সেদেশের নৌবাহিনী আমাদের উদ্ধার করে। পরে সরকারের আন্তরিকতায় কোস্টগার্ডের় উদ্যোগে দ্রুত সময়ে ফিরে আসা সম্ভব হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335