শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

জয়ের ধারায় ফিরলো রংপুর

টানা তিনটি ম্যাচে পরাজয়ের পর আজ সিলেটের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমেছিলো মাশরাফির রংপুর রাইডার্স। সেই লক্ষ্যে দারুণভাবে সফল হয়েছে তারা। ডেভিড ওয়ার্নারের দলকে আজ তারা ৪ উইকেটে হারিয়েছে। এদিন সিলেটের ছুঁড়ে দেয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নিতে সক্ষম হয় রংপুর। 

জয়ের জন্য ম্যাচের শেষ ওভারে রংপুরের প্রয়োজন ছিলো ৫ রান। অলোক কাপালির করা সেই ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়েছিলেন ক্রিজে থাকা অধিনায়ক মাশরাফি। এরপর তৃতীয় বলটিতে সোজা বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠিয়ে তিন বল বাকি থাকতেই জয় নিয়ে দেন ফরহাদ রেজা। ফলে জয়ের নায়ক হয়েই মাঠ ছাড়লেন তিনি।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে অবশ্য পাদপ্রদীপের আলোয় ছিলেন রংপুরের প্রোটিয়া তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স। কিন্তু নিজের অভিষেক বিপিএল ম্যাচটি জিতিয়ে আসতে পারেননি তিনি। মাত্র ২১ বলে ৩৪ রান করে তাসকিনের ১৪তম ওভারে বোল্ড আউট হন এই দক্ষিণ আফ্রিকান।

এদিন দারুণ ব্যাটিং করেছেন ডি ভিলিয়ার্সেরই স্বদেশী রাইলি রুশো। তাসকিনের প্রথম শিকার হয়ে ফেরার আগে মাত্র ৩৫ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। যেখানে তিনি হাঁকিয়েছেন ৯টি চার এবং ২টি ছয়। তবে আরও আগেই আউট হতে পারতেন রুশো। কেননা তাঁকে তিনবার সুযোগ দিয়েছেন সিলেটের ফিল্ডাররা।

তাসকিনের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ক্যাচ তুলেছিলেন রুশো। কিন্তু ক্যাচটি ধরতে পারেননি উইকেটরক্ষক জাকের আলি। ব্যাটের কানায় লেগে কিপারের কাছে চলে গিয়েছিলো বলটি। এরপর সন্দীপ লামিচানের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে দ্বিতীয় ক্যাচ তোলেন রুশো। এবারও ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষকের কাছে গিয়েছিলো বলটি। কিন্তু ধরতে ব্যর্থ হন জাকের। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আবারও সুযোগ দেন রুশো।

তাসকিনের করা ওভারের পঞ্চম বলটি মিড অন অঞ্চলে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন রুশো। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ক্যারিবিয়ান নিকোলাস পুরান। কিন্তু বলটি লুফে নিতে পারেননি তিনি। তাঁর হাতে লেগে সীমানা পার হয়ে গিয়েছিলো বলটি শেষ পর্যন্ত। তিন বার সুযোগ পাওয়া সেই রুশোই পরবর্তীতে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন ম্যাচের।

এদিকে রুশো ছাড়াও ২৪ বলে ৩৩ রানের আরেকটি ইনিংস এসেছে রংপুরের ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলসের ব্যাট থেকে। ২টি ছয় এবং ২টি চারের সাহায্যে এই ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি। বল হাতে এদিন রংপুর শিবিরে কাপন ধরিয়েছিলেন সিলেটের পেসার তাসকিন আহমেদ। ৪ ওভার বোলিং করে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়া ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ ইরফান এবং অলোক কাপালি।

এর আগে ম্যাচের শুরুতে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ৫০ বলে ৮৫ রানের বিধ্বংসী একটি ইনিংস খেলেন সিলেট সিক্সার্সের হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। এরই সাথে ১৯৪ রানের বিশাল পুঁজি পায় ডেভিড ওয়ার্নারের দলটি। এই ইনিংস খেলার পথে ৬টি ছয় এবং ৫টি চার হাঁকিয়েছেন সাব্বির।

শফিউল ইসলামের ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলটি বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে লং অফ অঞ্চলে রাইলি রুশোর হাতে ধরা পড়েন সাব্বির। ফলে শতক বঞ্চিত থেকে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। সাব্বির ছাড়াও বিপিএলের ২১তম এই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেছেন ক্যারিবিয়ান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান।

দলীয় ১০৩ রানের মাথায় ডেভিড ওয়ার্নার (১৯) ফেরার পর খেলতে নেমেছিলেন তিনি। এরপর ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে মাত্র ২৭ বলে ৪৭ রানের একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। যেখানে ৩টি ছয় এবং ৪টি চার হাঁকিয়েছেন এই ক্যারিবিয়ান।

এছাড়াও আফিফ হোসেন ধ্রুব ১৯ এবং লিটন দাস ১১ রান করেছেন। সিলেট শিবিরে কিছুটা চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছেন শুধুমাত্র রাইডার্স অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে ২টি উইকেট শিকার করতে পারলেও ৪ ওভার বোলিং করে ৩১ রান খরচ করেছেন তিনি। আর ৪১ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন আরেক পেসার শফিউল ইসলাম। বাদবাকি আর কোনও বোলারই সুবিধা করতে পারেননি।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ 

সিলেট সিক্সার্সঃ ১৯৪/৪ (২০ ওভার) (সাব্বির-৮৫, পুরান-৪৭*; মাশরাফি- ২/৩১, শফিউল-১/৪৩)

রংপুর রাইডার্সঃ  ১৯৫/৬ (১৯.৩ ওভার) (রুশো-৬১, ডি ভিলিয়ার্স-৩৪; তাসকিন- ৪/৪২, ইরফান-১/৩৪)

টসঃ রংপুর রাইডার্স (বোলিং)

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335