মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন

যেভাবে ৩০০ কোটির মালিক হলেন গরিব অটোচালক

ক্সক্লুসিভ ডেস্ক: পাকিস্তানের বাসিন্দা মোহম্মদ রশিদ। পেশায় অটোচালক। টানাটানির সংসার। নিজের অটো নেই, তাই ভাড়ায় একটা অটো চালান। মেয়েকে একটা সাইকেল কিনে দিতে চেয়েছিলেন রশিদ। সামান্য উপার্জন করা অটোচালকের ৩০০ টাকা সঞ্চয় করে যেখানে একবছর সময় লেগেছে একটি সাইকেল কিনে দিতে, সেই লোকটির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হঠাৎ দেখা যায় ৩০০ কোটি রুপি।

ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট দেখ চমকে ওঠেন রশিদ। ঠিক দেখছেন তো? নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি আবার ভাল করে পরীক্ষা করে দেখলেন। ভুল দেখছেন কিনা! কিন্তু নাহ! তিনি ঠিকই দেখেছেন। কিন্তু এটা সম্ভব হল কীভাবে? ভেবে কুল-কিনারা পাচ্ছিলেন না তিনি।

এটা দেখে আমি ঘামতে শুরু করি আর প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যাই, বলছিলেন রশিদ।

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কালো টাকা খোঁজ নিতে শুরু করলে দেশটির অনেক বাসিন্দাদেরই এরকম সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।

এমন ঘটনায় ভয় পেয়ে যাওয়া রশিদের কাছে ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি ফোন আসে। ফোন পাওয়া মাত্রই রশিদ গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের লোকেরা তাকে তদন্তকারীদের সহযোগিতা করার জন্য বুঝিয়ে বললে রশিদ রাজি হয়ে যান।

রশিদ এক সাক্ষাত্কারে বলেন, কোনও তদন্তকারী সংস্থা যদি আমাকে তুলে নিয়ে যায় সেই ভয়ে অটো চালানো বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আতঙ্কে আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানে এমনই ছবি উঠে আসছে। রশিদের মতো বহু গরিব পরিবারের অ্যাকাউন্টে ‘ভুতুড়ে’ টাকা এসে পড়ছে। তার পর সে টাকা গায়েবও হয়ে যাচ্ছে! রশিদের মতো একই অবস্থা হয়েছিল শারওয়াত জেহরা নামে এক ব্যক্তির। তাঁর অ্যাকাউন্টেও কয়েকশো কোটি টাকা জমা পড়েছিল।

পাকিস্তানে কালোটাকার কারবারিদের ধরতে নানা রকম পদক্ষেপ করছেন ইমরান খান। গত বুধবারেই তিনি বলেছিলেন, কালোটাকার কারবারিদের কোনোভাবেই রেয়াত করা হবে না।

রশিদদের মতো গরিব মানুষদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান থেকে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার পিছনে এটাও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সে দেশের আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। ক্ষমতায় এসে তাই ইমরান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। সম্প্রতি এক সভায় তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে এমন ‘ভুতুড়ে’ টাকার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এটা আপনাদের চুরি যাওয়া টাকা। এই টাকা চুরি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো কাজে লাগিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর সেই কথা শুনেছিলেন রশিদ। তাই ৩০০ কোটি টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢোকার পর থেকেই আতঙ্ক ঘিরে ধরে। টাকাটা অবশ্য রশিদের ভাগ্যে জোটেনি। মুকুট থেকে তিনি যেন ‘মুকুটহীন রাজা’।

তাই প্রতিবেশীরা রসিকতা করে তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন, রশিদ তো কপর্দকশূন্য ধনকুবের! ধনকুবের খাতায় নাম লেখানো রশিদরা কখনোই এসব টাকার হদিস সম্পর্কে ওয়াকিফহাল নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335