বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন
জিয়াউর রহমান, শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শাজাহানপুরে সাবেক স্ত্রীর উপর প্রতিশোধ নিতে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে দৈহিক মিলনের সময় গোপনে ধারণ করা ভিডিও প্রকাশের হুমকি এবং করলা ও শিমে মাঁচা কর্তনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে মেয়ে ও তার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফুলকোট পূর্বপাড়া গ্রামে।
মেয়ের বাবা আজহার আলী মন্ডল জানান, ১ বছর পূর্বে তার মেয়ে আরজিনাকে ফুলকোট বামনদিঘি গ্রামের মৃত আজাহার আলীর পুত্র রানা আহম্মেদ বাবলার (২৮) সাথে বিয়ে দেন। কিন্তু ছেলের স্বভাবগত কারনে প্রায় ৫ মাস পূর্বে মেয়ে তার স্বামীকে তালাক দেয় এবং পড়া লেখা শুরু করে। ডিভোর্সের পর থেকে রানা মোবাইলে এসএমএস করে বিভিন্ন ধরনের হুমকী দিতে থাকে। এমনকি স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক মিলনের সময় গোপনে ধারন করা ভিডিও প্রকাশের হুমকী দিচ্ছে। ভিডিও প্রকাশ করা হলে মেয়ের ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে যাবে এবং সামাজিক ভাবে তারা আর মুখ দেখাতে পারবেন না। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত রাতে তার ১০ শতাংশ জমিতে লাগানো শিম ও করলার মাঁচা কেটে ফেলেছে রানা। এতে করে তার ৪০ হাজার টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয় তার ফসল মনে করে একই রাতে প্রতিবেশী মাসুদ নামে এক কৃষকেরও ২২ শতাংশ জমির করলা মাঁচা কেটে ফেলেছে রানা। এঘটনা থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে এবং মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে রানা আহম্মেদ বাবলার নিকট এসএমএস’র মাধ্যমে হুমকির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদেরকে বলেন, ওদেরকে এসএমএস ধুয়ে পানি খেতে বলেন। বিয়ের পর দৈহিক মিলনের ২টি ভিডিও ধারন করেছেন। আজাহার আলী লোকটা খুব খারাপ। ডিভোর্সের পর তার বাড়ি থেকে যা যা নিয়ে গেছে তা ফেরৎ দিতে হবে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ভিডিও প্রকাশ করে দেবেন। সবজি আবাদ কাটার ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য উজ্জল হোসেন জানান, ডিভোর্সের পর হুমকি-ধামকির বিষয়টি জানতে পেরে বাবলার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে কথা বলতে রাজি হয়নি।
থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, ফসল কাটার বিষয়টি জেনেছেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সততায় উদ্বুদ্ধ করতে শাজাহানপুরে চালু হলো ‘সততা’ ষ্টোর
এস.এম.আল-আমিন, বিশেষ প্রতিনিধি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিষ্ঠাবান হিসাবে গড়ে তুলতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন শাজাহানপুর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোমিনুল ইসলাম। উপজেলার ডেমাজানি ক্লাস্টারের মাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু করেছেন ‘সততা’ ষ্টোর। পর্যায়ক্রমে ক্লাস্টারের সকল বিদ্যাল্যয়ে সততা ষ্টোর চালু করার কথাও জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক পর্যায় থেকে সততা, মূল্যবোধ তৈরিতে এই উদ্যোগ সহায়ক হবে বলে জানান আয়োজকরা। সততা ষ্টোরে থাকবেনা কোন বিক্রেতা, থাকবেনা কোন সিসি ক্যামেরা। শিক্ষার্থীরা নিজেরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করে ক্যাশ বক্সে টাকা রেখে আসবে। আবার নিজেই টাকা ভাংতি করে প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করবে।
মাড়িয়া সপ্রাবি’র শিক্ষার্থীরা উচ্চসি¦ত সততা ষ্টোরের এই নতুন উদ্যোগে। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ইমন বাবু জানায়, আমাদের খাওয়ার জিনিস ও খাতাপত্র গুলো আমরা সবাই এখন স্কুল থেকেই কিনি। অনেক ভালো লাগছে আমাদের। আমরা যেই জিনিস কিনি তার মূল্য ক্যাশবাক্সে রেখে দেই।
মাড়িয়া সপ্রাবি এর প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, স্যার এক যুগান্তকারী প্রোগ্রাম আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে চালু করেছেন। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্য সততা ও দায়িত্ববোধ তৈরি হবে, যা ভবিষ্যতে সুন্দর মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে ভূমিকা পালন করবে বলে বিশ্বাস করি।
এদিকে সততা ষ্টোর উদ্যোক্তা উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মোমিনুল ইসলাম জানান, শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ক্ষুদ্র পর্যায় থেকেই যদি তাদের মধ্য সততা ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে দিতে পারি, সেটাই আগামীর জন্য সবচেয়ে ফলপ্রসু কাজ করবে। শিশুরা সততায় উদ্বুদ্ধ হবে অপরকে উদ্বুদ্ধ করবে এমন ভাবনা থেকেই এই প্রচেষ্টা আমার।
উল্লেখ্য, এ বছরের উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম।