শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যবয়স্ক ছেলের হাতে লাঠি। সামনে অশীতিপর বৃদ্ধা মা। তাঁকে সেই লাঠি উঁচিয়ে বা কখনও লাঠির ঘা মেরে শাসাচ্ছে ছেলে।
এই ঘটনা এক দিনের নয়। নিমতার বিএল মুখার্জি রোডের বাসিন্দাদের কাছে এই দৃশ্য নিত্য দিনের। একতলা বাড়িতে থাকে আশি বছরের বৃদ্ধা শান্তিপ্রভা দেব। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে বিকাশ দীর্ঘ দশ বছর আগে বিয়ে করে আলাদা থাকেন। বাড়িতে এখন বৃদ্ধা থাকেন তাঁর ছোট ছেলেকে নিয়ে। ছোট ছেলে ভুলু বেকার। স্বামী সুকুমার রাজ্য সরকারের ভূমি রাজস্ব দফতরে চাকরি করতেন। তাঁর পেনসনই এখন ভরসা শান্তিপ্রভার। সেই টাকাতেই চলে মা আর বেকার ছেলের সংসার।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, নানা কারণে প্রায়ই মাকে মারধর করতেন ভুলু। কখনও টাকার জন্য, কখনও বা অন্য কোনও কারণে। প্রতিবেশীরা শুরুর দিকে অনেক বার প্রতিবাদও করেন। কিন্তু ভুলু উল্টে পাল্টা হুমকি দেওয়ায় গুটিয়ে যান তাঁরা। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, তার পর থেকে বাড়ির মূল দরজায় তালা দিয়ে রাখতেন ভুলু। যাতে কেউ বাড়িতে মায়ের সঙ্গে কথা না বলতে পারে। বৃদ্ধার বড়ছেলে বিকাশও বলেন, “মাঝে মাঝে আমি গিয়ে টাকা দিয়ে আসতাম। তবে, মা কখনই এ সব কথা বলেনি।”
কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই ঘটনা সহ্য করতে পারেননি প্রতিবেশীরাও। তাই সুযোগ পেয়েই ঠিক উল্টোদিকের বাড়ির কর্ত্রী প্রত্যাশা রায় চৌধুরী মারধরের গোটা ঘটনা মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করেন। আর সেই ছবিতেই দেখা যাচ্ছে কী ভাবে মধ্যবয়সী ভুলু লাঠি নিয়ে মারধর করছেন বৃদ্ধা মাকে। সঙ্গে তুই করে সম্বোধন।
প্রত্যাশা সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করেন। তার পরেই সেই ভিডিয়ো দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ভিডিয়ো পৌঁছয় নিমতা থানার পুলিশের কাছেও। তাঁরা প্রথমে ভুলুকে সাবধান করেন। কিন্তু তার পরেও কোনও পরিবর্তন হয় না ছেলের ব্যবহারের। মায়ের পেনশনের টাকা নিয়ে মাকে মারধর করেন ভুলু, অভিযোগ প্রতিবেশীদের। তার পরই ফের খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। এর পরই ভুলুকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃদ্ধার বড় ছেলে বিকাশ বলেন, “মা তাঁর নিজের বাড়িতেই আছেন। আমি বলব, যদি মা রাজি হয় তা হলে আমি আমার কাছেই এনে রাখব।”
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা