শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৮ অপরাহ্ন

ভূমি জরিপ অধিদপ্তরে আইন কর্মকর্তার কোন পদ না থাকলেও তা ব্যবহার করছেন অসাধু কর্মকর্তা

জিটিবি নিউজ :    ভূমি জরিপ অধিদপ্তরে আইন কর্মকর্তার কোন পদ না থাকলেও তা ব্যবহার করছেন একজন অসাধু কর্মকর্তা। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা হলেন সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার সাইফুল ইসলাম। তিনি সাভারের উত্তর রামচন্দ্রপুর মৌজায় এক কোটি ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে ভোগদখলীয় জমি ‘উদ্যোগ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির’ নামে রেকর্ডকৃত জমি কেটে এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর নামে রেকর্ড করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, রামচন্দ্রপুর মৌজার প্রায় ১০ একর জমি এস, এ, এবং আর এস, রের্কডীয় মালিকের কাছ থেকে উদ্যোগ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি খরিদ করেছেন এবং ভোগদখলে থাকা অবস্থায় বি, এস জরিপের মাঠজরিপে ‘উদ্যোগ কো-অপারেটিভ হাউজিং’ এবং তাদের ক্লায়েন্টদের নামে রেকর্ড পান। ৩০ ধারা রেকর্ডও তাদের নামেই ছিল। কিন্তু আপীলস্তরে গিয়ে আপীল অফিসার তাদের নামের রেকর্ড ঠিক রাখলেও সাইফুল ইসলাম অন্যায়ও অবৈধভাবে তাদের নামের রেকর্ড কেটে দিয়ে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তির নামে রেকর্ড করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগের ব্যাপারে উদ্যোগ হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন আব্দুল হাকিম লিখিত আকারে মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ দাখিল করলে যুগ্ম সচিব ও সেটেলমেন্ট অপারেশন-১ জনাব ফজলুর রহমান ওই অভিযোগটি তদন্ত করেন। ফজলুর রহমান অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করলেও আজ পর্যন্ত ওই নথির কোন হদিস পাওয়া যায়নি। পূর্বের সেটেলমেন্ট অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে সাইফুল ইসলামের সখ্যতা থাকায় উক্ত অভিযোগের বিষয় শুনানির সময় সরকারি পক্ষে প্রতিনিধি নিয়োগ দেন সাইফুল ইসলামের অনেক জুনিয়র এক কর্মকর্তা হেদায়েতুল ইসলাম কানুনগোকে।সূত্র জানায়, সাইফুল ইসলামের বাড়ি বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলায়। বিএনপি সরকারের উচ্চ-পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে তার দহরম-মহরম থাকার কারণে ওই সময় থেকেই সাইফুল ইসলাম দাপট দেখিয়ে ঢাকা সেটেলমেন্টে চাকুরী করে আসছেন। এরই সুবাদে তিনি অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মিরপুরে একটি ৫তলা বাড়ী এবং এলিফ্যান্ট রোডে আলীশান ফ্ল্যাট কিনে সেখানেই বসবাস করছেন। তিনিই অনিয়ম ও বে-আইনি কাজকে যাতে আইনে রূপান্তরিত করা যায় তাই তিনি নিজেই সেটেলমেন্ট অফিসারকে ম্যানেজ করে আইন কর্মকর্তা পদবী সৃষ্টি করে দিব্যি অনৈতিক কাজকে উৎসাহিত করে যাচ্ছেন। এছাড়াও সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার সাইফুল ইসলাম বৃহত্তর ঢাকার ৩২টি উপজেলায় কোন জরিপ কাজ না থাকায় ৩২ জন উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার নিজ নিজ উপজেলা অফিসে না গিয়ে তারা প্রতিনিয়ত সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার সাইফুল ইসলাম এর রুমে বসে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপ্রপচারসহ এবং বিভিন্ন কাজের তদবির নানা ধরণের জমির জাল জালিয়াতি করার ফন্দি ফিকির করছেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বগুড়া-গাবতলীর সাইফুল ইসলামই শুধুমাত্র এই অফিসেই নয়, অনেক অফিসেই এরকম অনেকেই উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা সেজে ঘাপটি মেরে বসে আছেন। এ বিষয়টি দেখার মতও কেউ নেই। তাই অন্যায়ের শিকার ভুক্তভোগী জমির মালিকরা এই অন্যায় অবিচারের যথাযথ বিচার এবং দোষী কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। বিচার হলে আর কেউ এমন অন্যায়ের শিকার হবেন না বলে জানান তারা। আইন কর্মকর্তার পদবী সম্পর্কে অধিদপ্তরের পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, ঢাকা সেটেলমেন্টে আইন কর্মকর্তার কোন পদ নেই। যাদের আইন বিষয়ে একটু বেশি জ্ঞান-গরিমা আছে তাদের হয়তো প্রশাসন আইন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করানো হয় বলে জানান, তিনি আরও জানান ভূমি অধিদপ্তরে আইন কর্মকর্তা বলে কোন পদ নেই, তবে এই পদের নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ কোন অপকর্ম করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাইফুল ইসলাম আইন কর্মকর্তা পদবী ব্যবহার করেন, এমন পদবী ব্যবহার করার তার কোন এখতিয়ার নেই। কোথা থেকে কিভাবে এ পদবী ব্যবহার করেন তা আমারও জানা নেই। তবে এটা সত্য যে এই নামে কোন পদ ভূমি অধিদপ্তরে নেই। অভিযুক্ত সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আসলে ভূমি অধিদপ্তরে আইন কর্মকর্তা নামে কোন পদ নেই। তবে যারা যোগ্য তাদের দিয়ে দায়সাড়াভাবে আইন কর্মকর্তার কাজ চালানো হচ্ছে। এসময় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আপনি একজনের জমি আরেকজনের নামে রেকর্ডভুক্ত করে দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি তার কোন উত্তর দেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335